শতবর্ষে আলোকিত ‘ভুবনময় ভানু’

কলকাতা: হতে পারতেন অগ্নিযুগের সশস্ত্র বিপ্লবী। হয়ে গেলেন বাংলা ফিল্ম জগতের এক মহারথী। তিনি ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর উদ্যোগে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ১২ জানুয়ারি দেখানো হলো তথ্যচিত্র ‘ভুবনময় ভানু’। এই বছর তাঁর জন্মশতবার্ষিকী। তাই সুদূর লস অ্যাঞ্জেলেসে বসে লকডাউনের সময়ই কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে এই তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শুভাশিষ মুখোপাধ্যায়, সাহেব চট্টোপাধ্যায়, সৈকত মিত্র, অম্বরিশ ভট্টাচার্য, খরাজ মুখোপাধ্যায়রা।

ভানুর জ্যেষ্ঠপুত্র গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, বাংলায় স্ট্যান্ডআপ কমেডির সূচনা করেন তাঁর বাবা। শিল্পগুণে নিজেকে জনপ্রিয়তার সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যান। শুধুমাত্র তাঁর নাম নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘ভানু পেল লটারি’, ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট’-এর মত জনপ্রিয় ছবি। ভারতীয় ছবির ইতিহাসে এ এক বিরল দৃষ্টান্ত।

“ভানুকাকু আদতেই একজন মজার মানুষ ছিলেন,” বললেন সৈকত। “ছোটবেলায় একবার বসুশ্রী প্রেক্ষাগৃহে পয়লা বৈশাখের আড্ডাতে গেছি। মান্না দে ছাড়া সকলে একই ঘরে বসে আছেন। মান্নাজ্যেঠু সেই সময় বম্বের গায়ক, তাই তিনি একটু আলাদা থাকতেন। ভানুকাকু যাওয়ার সময় মান্নাজ্যেঠুর কাছে গিয়ে কানে-কানে বললেন, ‘মান্নাদা, ভালো আছেন তো? ইউএসএ থিক্যা ঘুইর‍্যা আইলাম, ওখানে আপনার চেয়ে হেমন্তর নাম বেশি।’ ব্যাস এটা বলেই ভানুকাকু চলে গেলেন।”

আরও পড়ুন: নব্বইয়ের ‘সত্যান্বেষী’, বাদ পড়লেন ব্যোমকেশ

ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়-জহর রায় জুটিকে বাংলার লরেল-হার্ডি বলে মনে করেন শুভাশিষ। “একটা ডায়লেক্টকে কৌতুকের মাধ্যমে জনপ্রিয় করে তুলতে পেরেছিলেন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়,” বললেন তিনি। “তাঁর সংলাপ ডেলিভারির টাইমিং মারাত্মক ছিল। মাঝের একটা দশক—আমরা যখন কাজ করছি—সেই সময় কমেডি সংলাপে রুচিশীলতার অভাব বোধ করতাম। কমেডিটা ভীষন স্থূল হয়ে গিয়েছিল। জোর করে দর্শককে হাসানোর চেষ্টা থাকত সেখানে। ভানু-জহরকে কোনওদিনই সেটা করতে হয়নি। শুধুমাত্র ছবি নয়, বাংলা থিয়েটারেও এখন কমেডি প্রায় নেই।”

ছবি: গার্গী মজুমদার

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *