পারলে আগামী দশটা ছবিই পিরিয়ড পিস করব: শুভ্রজিৎ
RBN Web Desk: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘আরণ্যক’ আসতে চলেছে ছবির পর্দায়। পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র সম্প্রতি তাঁর এই ছবি ঘোষণা করেছেন। তবে এই মুহূর্তে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘দুই বোন’ অবলম্বনে ‘মায়ামৃগয়া’র কাজ নিয়ে ব্যস্ত শুভ্রজিৎ। এই ছবিতে অভিনয় করছেন অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত ও ঋতাভরি চক্রবর্তী।
এদিকে বিভূতিভূষণের ‘অপরাজিত’ উপন্যাসের শেষাংশ অবলম্বনে শুভ্রজিতের ‘অভিযাত্রিক’ মুক্তির প্রতীক্ষায়। পরপর তিনটি পিরিয়ড পিস নিয়ে ছবি করার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভ্রজিৎ রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন, “আমার এই ধরণের গল্পে কাজ করতে ভালো লাগে। একটা বিশেষ সময় সম্পর্কে পড়াশোনা ও রিসার্চ করে এগোতে হয়। এটা আমার খুব পছন্দের জায়গা। পারলে আগামী দশটা ছবিই পিরিয়ড গল্পের ওপর করতে চাইব।”
আরও পড়ুন: সব কান্নার শব্দ হয় না, বেজে উঠল পটদীপ
তবে ‘আরণ্যক’ নিয়ে কাজ করা যে কঠিন হবে সেটা মেনে নিলেন শুভ্রজিৎ। “সেটাই আসল চ্যালেঞ্জ। ‘দুই বোন’ গল্পটাকে যেমন সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে রেখেছি। সেটা শুধুমাত্র একটা পরিবারের গল্প হয়ে থাকবে না। সেই সময়ের জীবনযাত্রা, রাজনৈতিক ওঠপড়া বা বডি ল্যাঙ্গুয়েজ সবই উঠে আসবে ছবিতে। সেদিক থেকে দেখলে সেটাও একটা কঠিন কাজ। ১৯২৫ থেকে ১৯৩০-এর রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটকে ধরতে গিয়ে ছবিতে আসবেন ডঃ নীলরতন সরকার, সুভাষ চন্দ্র বসু ও রবীন্দ্রনাথ। থাকবে ব্রিটিশরাজ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রসঙ্গও,” জানালেন শুভ্রজিৎ।
‘আরণ্যক’ নিয়ে এই মুহূর্তে চিন্তাভাবনা করছেন না পরিচালক। ‘মায়ামৃগয়া’র কাজ শেষ করে তবেই ফের বিভূতিভূষণের গল্পে হাত দেবেন।
‘মায়ামৃগয়া’য় মূল উপন্যাসের গল্প পরিবর্তন হচ্ছে না, স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন শুভ্রজিৎ। “তবে চিত্রনাট্য করতে গেলে কিছু সমসাময়িক ঘটনা তৈরি করে নিতে হয়। সেগুলো ছবির প্রয়োজনেই আসবে,” জানালেন তিনি।
এই ধরণের সাহিত্যনির্ভর গল্পের ক্ষেত্রে বাজেট একটা বড় বিষয়। তাই এই প্রজন্মের দর্শকের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে কিনা তাই নিয়ে একটা ঝুঁকি থেকেই যায়। এই প্রসঙ্গে শুভ্রজিৎ জানালেন, “ছবিটা আমি সবার আগে নিজের জন্য করি। দর্শকের জন্য তো নিশ্চয়ই করি কিন্তু আমি যদি ভালো জিনিসটা তাদের সামনে পরিবেশন না করি, তাহলে তারা জানবেন কী করে কোনটা ভালো আর কোনটা নয়? রোজ পান্তাভাত খেলে সেটার স্বাদই জিভে লেগে থাকবে। বিরিয়ানিটাও তো তাঁদের খাইয়ে দেখাতে হবে। স্বাদ ভালো লাগলে তবেই তো তারা দুটোর মধ্যে তফাৎ করতে পারবেন। তাছাড়া সাহিত্যনির্ভর বা ইতিহাসভিত্তিক ছবি যে হচ্ছে না তেমন তো নয়। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘এক যে ছিল রাজা’ বা ‘গুমনামী’র মতো ছবিতে পুরোনো সময়টা উঠে এসেছে। ‘চাঁদের পাহাড়’ নিয়েও কাজ হয়েছে। তাই এই ধরণের কাজ হচ্ছে। গল্পটা হয়তো কেউ-কেউ এই সময়ে তুলে আনছেন। আমি সেটা আনছি না। কারণ ওই গল্পগুলোর আসল সময়টাকে ধরা আমার অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং মনে হয়।”
বিভূতিভূষণের ‘অপরাজিত’ ও ‘আরণ্যক’ ছাড়াও ‘ইছামতির গল্প’ নিয়ে ছবি করার পরিকল্পনা আছে শুভ্রজিতের। তবে শেষেরটা নিয়ে এখনই কিছু ভাবছেন না। ‘আরণ্যক’-এর কাস্টিং নিয়েও তিনি এখনই কিছু বলতে নারাজ।
শীঘ্রই শুরু হবে ‘মায়ামৃগয়া’র শুটিং।