নবারুণ ভট্টাচার্যের কাহিনী, উৎসবে ঋদ্ধির ‘কোল্ডফায়ার’

RBN Web Desk: পৃথিবীটাকে যদি একটা প্রকাণ্ড বাজাররূপে কল্পনা করা যায় তাহলে সব মানুষই সেখানে ক্রেতা ও বিক্রেতা। নানা অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের সঙ্গে এখানে সুখ, আরাম, ঐতিহ্য কিংবা অহংকারও বিক্রি হয় চড়া দামে। সেসব যারা কিনতে পারেন তারা সেই দিয়েই গড়ে তোলেন এক একটি ব্যক্তিগত স্বর্গ। এভাবেই পরোক্ষভাবে তৈরি হয় শ্রেণী বিভাজন। টাকার জোরে একদিকে কিছু মানুষ বড় থেকে আরও বড়লোক হয়ে যান। অন্যদিকে কিছু মানুষের কপালে জোটে দারিদ্র্যের লাঞ্ছনা। এই বিষয়কে ভিত্তি করে নবারুণ ভট্টাচার্য লিখেছিলেন ‘কোল্ডফায়ার’ ছোটগল্পটি। সেই কাহিনী অবলম্বনেই ঋদ্ধি সেন তৈরি করেছেন একই নামের স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি। তিরিশ মিনিটের এই ছবিতে অভিনয় করেছেন কৌশিক সেন ও সোমক ঘোষ। অতিথিশিল্পীর ভূমিকায় রয়েছেন রেশমী সেন। 

ছবির সময়কাল ভবিষ্যতের পৃথিবী। রিয়েল এস্টেট জগতের পরিচিত মুখ, ব্যবসায়ী কেপি সরকারকে (কৌশিক) একটি অদ্ভুত ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিবিশিষ্ট গ্যাজেট বিক্রি করতে আসে একজন সেলসম্যান, যার নাম জিবি (সোমক)। এই গ্যাজেটটির নাম কোল্ডফায়ার। মানুষের শেষকৃত্যকে আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে এই গ্যাজেট। ডার্ক কমেডি ‘কোল্ডফায়ার’-এর মূল গল্প এটাই। 

ছবির কাহিনী নির্বাচন প্রসঙ্গে ঋদ্ধি রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন, “কনজ়িউমরিজম বা ভোগবাদ ধীরে-ধীরে আমাদের সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করেছে। মানুষ সারাক্ষণই কিছু না কিছু বেচতে ব্যস্ত। এমনকি আমরা একে অপরকে বেচে দিতেও পিছপা হই না। নবারুণ ভট্টাচার্যের এই গল্পটা বর্তমান সময়ে সাংঘাতিক প্রাসঙ্গিক। সমাজের সব স্তরে অর্থনীতির ভিত্তিতে একটা শ্রেণী বিভাজন হয়েই যায়। তাই এই কাহিনী সকলের সামনে বলার একটা প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলাম। সমাজের এই শ্রেণী বিভেদটা আমাকে খুব নাড়া দেয়।” 

আরও পড়ুন: রেগে আগুন কমল মিত্র, সুবিধা হলো সত্যজিতের

ছবির সময়কালকে পিছিয়ে ২০২৯ করা হয়েছে। ‘কোল্ডফায়ার’-এর দৈর্ঘ্য ও ছবির কাস্টিং প্রসঙ্গে ঋদ্ধি বললেন, “ছোটছবির জন্য এই গল্পটা একদম সঠিক। একটা গল্পই ঠিক করে দেয় ছবির দৈর্ঘ্য কতটা হবে। তবে কেপি সরকারের চরিত্রে বাবাকে (কৌশিক) কাস্ট করার ইচ্ছে শুরু থেকে ছিল না। চিত্রনাট্য লেখার পর মনে হলো এই চরিত্রটা বাবার মতো করে কেউ করতে পারবে না। সোমক খুব ভালো অভিনেতা হওয়া সত্বেও ওকে অভিনয় করতে খুব একটা দেখা যায় না। সেলসম্যানের চরিত্রে ও অসম্ভব ভালো কাজ করেছে।” 




ছবিতে সহকারী পরিচালকের ভূমিকায় রয়েছেন অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, “এর আগে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বিজয়া’-তে কাজ করেছিলাম। নাটকেও আমি এরকম কাজ করে থাকি। ক্যামেরার পিছনের কাজ করতে আমার বরাবরই খুব ভালো লাগে। এখানে প্রোডাকশনের সবরকম কাজেই হাত লাগিয়েছি। কিছু অসুবিধা এলেও শুটিং খুব তাড়াতাড়ি হয়েছে। ঋদ্ধি খুব সুষ্ঠুভাবে সমস্তটা করেছে।”

ঋদ্ধির সঙ্গে ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন অনিরুদ্ধ দাশগুপ্ত। ছবির চিত্রগ্রহণ ও সম্পাদনায় রয়েছেন তিয়াস সেন ও সুমিত চৌধুরী। সুরারোপ করেছেন প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়। পোশাক পরিকল্পনায় সুরাঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শর্ট অ্যান্ড ডকুমেন্টারি প্যানোরামা (নন-কম্পিটিটিভ) বিভাগে প্রদর্শিত হবে ‘কোল্ডফায়ার’।

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *